Wednesday, September 14, 2011

লাইলাতুল কদর

লাইলাতুল কদর

ক্বদর শব্দের অর্থ : মহাত্ম বা সম্মান, এই মহাত্ম সম্মানের কারণে একে লাইলাতুল ক্বদর, তথা মহিমান্বিত রাত বলা হয়। বারটি মাসের মধ্যে ফযিলতপূর্ণ মাস হল রমযান মাস। এই মাসের একটি রাত্র হচ্ছে লাইলাতুল ক্বদর। যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ক্বদরের রাত্রের ফযিলত মহাত্ম সম্পর্কে কুরআনুল করিমে সূরাতুল ক্বদর নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল হয়েছে। অর্থঃ () নিশ্চয়ই আমি একে (পবিত্র কুরআনকে) নাযিল করেছি শবে ক্বদরে। () শবে ক্বদর সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? () শবে ক্বদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। () এই রাত্রিতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ রূহ অবতীর্ণ হয় দের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। () এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সুরা ক্বদর) মহান আল্লাহ আরও বলেন, অবশ্যই আমি কুরআন নাযিল করেছি একটি বরকতপূর্ণ রাতে।” (সুরা দুখান: )

ব্যাখ্যা : বরকতপূর্ণ রাতের দ্বারা বিভিন্ন তাফসিরবিদগণ শবে ক্বদরকে বুঝিয়ছেন। শবে ক্বদরের ফযিলত মহাত্ম সম্পর্কে কুরআন পাকের এই বর্ণনাই যথেষ্ট। কারণে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্বদর রজনীর ফযিলত সম্পর্কে তেমন কিছু বলেন নাই। তবে উহা কোন মাসে কোন তারিখে হতে পারে এবং উহা কারও নসীব হলে সে তখন আল্লাহর নিকট কি চাবে সে সম্পর্কে তিনি উপদেশ দিয়েছেন।
ক্স আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে ক্বদরের রাতে ইবাদত করে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারী মুসলিম)
ক্স আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা শবে ক্বদর তালাশ কর। রমযানের শেষ দশকের বে-জোড় রাত্রিতে। (বুখারী)
ক্স আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমযানের শেষ দশক শুরু হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারারাত জাগতেন, নিজের পরিবারবর্গকেও জাগাতেন এবং (আল্লাহর ইবাদতে) খুব বেশী সাধনা পরিশ্রম করতেন। (বুখারী মুসলিম)
ক্স আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমযানের শেষ দশ রাতে শবে ক্বদর সন্ধান কর। (বুখারী মুসলিম)

* আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের প্রথম দশদিন এতেকাফ করলেন। সময় একবার মাথা বের করে বললেন, আমি ক্বদরের রাত্রি তালাশ করতে গিয়ে প্রথম দশকে এতেকাফ করেছি, অতঃপর মধ্যম দশকেও এতেকাফ করেছি। অতঃপর স্বপ্নে আমার নিকট কেউ এসে বল্ল ক্বদও রজনী শেষ দশকে। অতএব যে ব্যক্তি আমার সাথে প্রথম দশকে এতেকাফ করেছে, সে যেন শেষ দশকেও এতেকাফ করে। নিশ্চয় উহা আমাকে স্বপ্নে দেখান হয়েছিল। কিন্তু পরে উহা আমাকে ভুলিায়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মনে পড়ে আমি রাত্রির ফজরে নিজেকে পানি আর কাদার মধ্যে সিজদা করতে দেখেছি। অতএব, তোমরা উহা শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিতেই তালাশ করবে। আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, সেই রাতেই আকাশ ভারিবর্ষণ করল। মসজিদ তখন ছাপরা ছিল, অতএব, ছাদ থেকে পানি পড়ল। তখন আমার দুচোখ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখল যে তাঁর কপালে পানি কাদার দাগ লেগেছে। আর তাছিল একুশ তারিখের সকাল, তবে আবদুল্লাহ ইবনে উনাইসের বর্ণনায় রয়েছে- তেইশ তারিখের সকাল। (বুখারী মুসলিম)

ব্যাখ্যা : উপরোক্ত হাদিসের দ্বারা বুঝা গেল শবে ক্বদর প্রত্যেক ৎসর একই তারিখে হয় না। তবে সকল বর্ণনাকারীর একমত রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে হয়।
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। আমি যদি ক্বদরের রাত খুঁজে পাই, তাহলে আমি ওই রাতে কি বলবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাব দিলেন, তুমি বলবে- (আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নী) অর্থ: হে আল্লাহ তুমি অবশ্যই ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা পছন্দ করো, কাজেই আমাকে ক্ষমা করো। (তিরমিযী)

Source: http://alhudaonline.com

No comments:

Post a Comment